মন খারাপ আমার-আপনার
সকলেরই হয়৷ কিন্তু এই মন
খারাপ যখন একটি 'ক্রনিক' অসুখ
বা মানসিক রোগে রূপ নেয়,
বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়, তখন
তা চিন্তার বিষয় বৈকি৷
সে অবস্থায় ওষুধ
খেলে তা বাচ্চার জন্য
হতে পারে ক্ষতিকারক৷
গর্ভাবস্থায় বিষন্নতা নতুন কিছু নয়৷
হরমোনগত পরিবর্তনের
সঙ্গে গর্ভাবস্থায় মানসিক রোগ
বা 'ডিপ্রেশন' দেখা দিতেই পারে৷
এমনকি সন্তান জন্মের পর জন্মোত্তর
বিষন্নতাও দেখা যায়
কোনো কোনো মায়ের মধ্যে৷ এই
অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অনেক
মা-ই
শক্তিশালী 'অ্যান্টি ডিপ্রেসান্ট'-
এর দ্বারস্থ হন৷ আর সেখানেই
দেখা দেয় সমস্যা৷
গর্ভকালীন
সময়ে আপনি যদি নিয়মিত এ ধরনের
ওষুধ খান, তাহলে আপনার শিশুর
'অ্যাটেনশন ডেফিসিট
হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার' (এডিএইচডি),
অর্থাৎ 'মনোযোগের অভাব
এবং অতি-সক্রিয়তা' হওয়ার
সম্ভাবনা বেড়ে যায় বহুগুণ৷
অতীতে এডিএইচডি-র সঙ্গে মূলত
জিনগত সম্পর্কের কথা বলা হলেও,
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস
জেনারেল হাসপাতালের
'মলিকিউলার সাইকিয়াট্রি'
বিভাগের অধ্যাপক রয় পেরলিস-এর
গবেষণায় কিন্তু এমনটাই
উঠে এসেছে৷
এডিএইচডি অসুখ হলে শিশুদের
মধ্যে অন্যমনস্কতা, অতিরিক্ত
চঞ্চলতা বা অতি আবেগের
সমস্যা দেখা দেয়৷ এতে
শিশুরা অতিরিক্ত মানসিক চাপ,
অনিদ্রা, পড়াশোনায়
অমনোযোগিতা ইত্যাদি সমস্যায়
ভোগে৷ অনেকক্ষেত্রে অন্যান্য
আচরণগত সমস্যা, যেমন অপরাধ
প্রবণতা বেড়ে যায়৷
এমনকি কখনো সখনো এডিএইচডি-র
ফলে তাদের শারীরিক বিকাশও
ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
চিন্তার বিষয় এটাই যে, গর্ভধারণের
পর
কোনো মা যদি 'অ্যান্টি ডিপ্রেসান্ট'
জাতীয় ওষুধ হঠাৎ করে বন্ধ করে দেন,
তাহলে এ সমস্যা আরও
বাড়তে পারে৷ তবে সাধারণ, নিত্য-
নৈমিত্তিক মন খারাপের
ক্ষেত্রে 'অ্যান্টি ডিপ্রেসান্ট'-এর
প্রয়োজন হয় না৷ এ রকম ওষুধের
প্রয়োজন হয় 'ক্রনিক ডিপ্রেশন'-এর
ক্ষেত্রে৷ মুশকিল হচ্ছে, মনের অসুখ,
মন খারাপ বা গর্ভকালীন
বিষন্নতা কখন যে মানসিক রোগের
আকার ধারণ করে – সেটা বোঝাই
সবচেয়ে কঠিন৷ তাই গর্ভাবস্থায়
মায়ের মধ্যে মানসিক অসুখের
কোনোরকম লক্ষণ শনাক্ত করা গেলে,
অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন
হওয়া অত্যন্ত জরুরি৷
উল্লেখ্য,
যুক্তরাষ্ট্রে এডিএইচডি যেন
একটি সাধারণ রোগে পরিণত
হয়েছে৷ দেশটিতে প্রতি বছর ৫
থেকে ১৭ বছর বয়সের প্রায় ৯ শতাংশ
শিশুর মধ্যে ধরা পড়ছে এ রোগ৷
বিশেষজ্ঞদের মতে,
স্কুলগামী শিশুদের মধ্যে ৩-৫ ভাগ
শিশুই এডিএইচডি-তে ভুগছে৷
'রিটালিন' জাতীয় উত্তেজক ওষুধ
ব্যবহারে শিশুদের আচরণে ভারসাম্য
ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও, এর ফল
হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি – এমনটাই
ধারণা চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের৷
ডিজি/জেডএইচ (এএফপি, এপি)
Monday, September 01, 2014
Subscribe to:
Post Comments (Atom)

0 comments:
Post a Comment