কুকুরের কাজ কুকুর করেছে! কিন্তু
কী করেছে? মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের এক কুকুর
চিনে ফেলেছে এক হাজারেরও
বেশী শব্দ৷ কী করে সম্ভব
হলো তা?
সারমেয় গোষ্ঠীর এই শিক্ষিত
সদস্যটির নাম চেজার৷ মাদি কুকুরটির
মালিক জন পিলে নামের এক ব্যক্তি৷
প্রায় তিন বছর আগে এক বুদ্ধি আঁটেন
তিনি৷ অবশ্য
আইডিয়াটি তিনি পেয়েছিলেন ২০০৪
সালে, যখন
সংবাদপত্রে বেরিয়েছিল
একটি জার্মান কুকুরের
বিদ্যাজ্ঞানের খবরটি৷
রিকো নামের জার্মান ঐ কুকুরটি ২০০
শব্দ চিনতো৷ তার সামনে সেই শব্দ
উপস্থাপন করা হলেই
সেটি নিয়ে আসতো সে৷ দারুণ মজার
তাই না! তাহলে চেজারের প্রভু আর
বসে থাকেন কি করে! তাই
তিনি যোগাড় করলেন নানা তথ্য
উপাত্ত৷ পড়তে শুরু করলেন কুকুর
বিদ্যা নিয়ে৷ এ
নিয়ে তাঁকে সহায়তায়
এগিয়ে আসে ওর্ফড কলেজের
মনোবিদ্যার অধ্যাপক অ্যালিস্টন
রিড এবং তাঁর সঙ্গীরা৷ সেই
কলেজে একই বিষয়ে ৩০ বছর যাবত
শিক্ষকতা করেছেন কুকুরটির মালিক
জন৷
চেজার হচ্ছে সারমেয় জাতির
মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত বর্ডার
কোলি জাতের –
শক্তি এবং বুদ্ধিতে যারা অন্যদের
চেয়ে বেশ এগিয়ে৷ ২০০৪ সালেই
তিনি চেজারকে সেই ছেলেবেলায়
নিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় একটি কুকুর
বিক্রি কেন্দ্র থেকে৷
খুব ভোর বেলা বের হয়ে পড়তেন জন৷
ঝিঁঝিঁ ডাকা ভোরে ৷ এরপর ক খ
পড়াবার মতো তাকে নিয়ে দৈনিক
পাঁচ ঘণ্টা করে কাগজ কলম আর
খেলনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যান জন৷
কি করে সে শিখলো সে এত শব্দ?
বিষয়টি কঠিন৷ জন ও তার
সাথিরা একটি খেলনা নিয়ে টানা ৪০
মিনিট কিংবা তারও বেশী সময়
সেটির নাম উচ্চারণ করতো চেজারের
সামনে৷ এরপর
খেলনাটি লুকিয়ে রেখে চেজারকে বলা হতো ...যাও
তো খুঁজে নিয়ে এসো অমুক
খেলনাটি৷ প্রভুর কথা তো আর
ফেলতে পারতো না সে, তাই
খুঁজে আনতো সেটি৷ এভাবেই শুরু৷
প্রতিদিন ওর জন্য বরাদ্দ ছিল
একটি শব্দ৷ আর অবশ্যই এ
শব্দগুলো খেলনার নাম৷
আসলে মানবসম্প্রদায়ের শিশুদের
যে কৌশলে শব্দ শেখানো হয়,
অনেকটা সেই কৌশলই প্রয়োগ
করেছিলেন তারা৷
আস্তে আস্তে দেখা গেলো চেজার
খুবই মেধাবী আর অনুগত ছাত্র৷
এমনিতেই চেজার যে জাতের,
তারা অন্য কুকুরের চেয়ে বেশী কাজ
করতে পারে৷ অন্য কুকুরের
চেয়ে মনিবের কথাও শোনে বেশী৷
একেবারে প্রভুভক্ত কুকুর!
পরিকল্পনার প্রথমেই ছিল
চেজারকে শিখতে হবে জার্মান
কুকুরটির চেয়ে বেশী শব্দ৷
বিয়াল্লিশ বছর বয়সী জন বলছেন,
''আমি ওকে শিখিয়েছি৷ এ জন্য তিন
বছর সময় লেগেছে৷ এই তিন বছরে ও
শিখেছে ১ হাজার ২২টি শব্দ৷''
চেজারকে শেখাবার জন্য স্যালভেশন
আর্মির দোকান থেকে বাচ্চাদের
ব্যবহৃত খেলনা যোগাড় করতেন জন৷
তিনি জানালেন, সব খেলনার নাম
মনে রাখা হয়তো ওর জন্য কষ্টকর৷ আর
তাই ওকে শেখাবার সময় বিভিন্ন
খেলনার নাম বিভিন্ন রঙের
মোটা কলম দিয়ে লেখা হতো৷ তার
খেলনাগুলোর মধ্যে আছে বিভিন্ন
প্রাণী, মাছ এবং বল৷
এক হাজার শব্দ শেখানোর পর
চেজারের মালিক জন চিন্তা করলেন,
এবার কী করা যায়৷ মাথায়
চিন্তা এলো, ''ওকে কি ব্যাকরণ
শেখানো সম্ভব! কারণ, কুকুরটি এই
যেমন, প্রাণী কিংবা বল অথবা অন্য
কিছু, কোনটা কোন দলের –
তা বুঝতে পারে৷'' আর তাই
ব্যাকরণের
মতো খটোমটো বিষয়ে চিন্তা করছিলেন
তিনি৷ অবশ্য এ নিয়ে বেশি দূর
এগোননি তিনি৷
আপাতত ১০২২ শব্দ নিয়েই ক্ষান্ত
রাখা হয়েছে চেজারকে৷
হাজারো জিনিসের
মাঝে যদি চেজারকে নাম উচ্চারণ
করে বলা হয়, 'ওটা নিয়ে এসো তো',
তখন দে ছুট৷ আর একটু পরেই
তাকে দেখা যাবে সেটি ওর মুখে!
''চেজার খুব ভালোবাসে খেলতে৷
এখন তাকে কিছু শেখানো হচ্ছে না৷
কিন্তু এই সময়েও সে প্রতিদিন
সকালে উঠে বাইরে বেরোবার
আব্দার করবে৷ বাইরে গিয়ে কিছু
শেখার জন্য ব্যাকুল ভাবে তাকাবে,
আমাকে ডাকবে৷ আর প্রতিদিন চার-
পাঁচ ঘণ্টা সে থাকতে চাইবে আমার
সঙ্গে'' – জানালেন জন৷
Monday, September 01, 2014
Subscribe to:
Post Comments (Atom)

0 comments:
Post a Comment